
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর থেকে অপহরণের ২৩ দিন পর যশোরের একটি খামারবাড়ি থেকে চারজনকে শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় চারজনকে আটক করা হয়েছে।
বুধবার (৫ নভেম্বর) ভোররাতে চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি), সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল ও পুলিশ সুপারের বিশেষ টিমের যৌথ অভিযানে যশোরের হাজিরবাগ ইউনিয়নের কুল্লা গ্রাম থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়।
জীবননগরের গোয়ালপাড়া (মাঠপাড়া) গ্রামের হাজারী মণ্ডলের ছেলে শওকত আলী (৫৩) থানায় অভিযোগ করেন। স্বর্ণ চোরাচালান ও আত্মসাতকে কেন্দ্র করে আসামি আব্দুল মজিদসহ একাধিক ব্যক্তি তার ছেলে ও অপর কয়েকজনকে অপহরণ করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। এ ঘটনায় ২১ অক্টোবর জীবননগর থানায় পেনাল কোডের ৪৪৭, ৩৬৪, ৫০৬ ও ৩৪ ধারায় মামলা (নং-০৮) দায়ের করা হয়।
মামলার অভিযোগ অনুযায়ী, গত ১২ অক্টোবর সন্ধ্যায় ও ১৩ অক্টোবর সকালে আসামিরা স্বর্ণ চোরাচালানের বিরোধকে কেন্দ্র করে শফিকুল ইসলাম (৩৫), আনারুল ইসলাম (৫০), হাসান মিয়া (২৬), আবুল হোসেন (২৭) ও স্বপন ইসলামকে (৪৪) অপহরণ করে নিয়ে যায়।
চুয়াডাঙ্গা জেলার পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা, বিপিএম (সেবা)-এর সার্বিক দিকনির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) জামাল আল নাসের এবং সহকারী পুলিশ সুপার (দামুড়হুদা সার্কেল) আনোয়ারুল কবীরের নেতৃত্বে বুধবার ভোরে ঝিকরগাছার কুল্লা গ্রামের রেজাউল ইসলামের খামারে অভিযান চালানো হয়।
অভিযানকালে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে খামারের মালিক রেজাউল ইসলাম ও সহযোগী আব্দুল গফ্ফার পালিয়ে যায়। তবে ঘটনাস্থল থেকে পাহারারত অবস্থায় বিল্লাল হোসেন (৪০), তার স্ত্রী সাগরিকা খাতুন (২৮), স্থানীয় গ্রাম্য চিকিৎসক বিকাশ দেবনাথ (৩০) এবং শফিকুল ইসলাম (৩৫) কে আটক করা হয়।
উদ্ধারকৃত ভিকটিমদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গত ১২ অক্টোবর সকালে স্বর্ণ চোরাচালানের ৫০ পিস স্বর্ণের বার খোয়া যাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাদের অপহরণ করা হয়। পরে যশোরের ওই খামারে নিয়ে গিয়ে অমানুষিক নির্যাতন চালানো হয় এবং শফিকুল ইসলামের চারটি আঙুল কেটে দেওয়া হয় বলে তারা জানান।
চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) জামাল আল নাসের বিকাল ৫টায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, চক্রটি স্বর্ণ চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত। স্বর্ণ হারানোর ঘটনায় প্রতিশোধ নিতে ভিকটিমদের অপহরণ করে যশোরে নিয়ে বন্দি অবস্থায় অমানুষিক নির্যাতন চালানো হয়। বিশেষ টিম গঠন করে অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে তাদের জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের শনাক্ত করা হয়েছে এবং তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।”
মন্তব্য করুন