
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলায় খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির (ভিজিডি ও ভিজিএফ) জন্য বরাদ্দ করা ১৬২ বস্তা সরকারি চাল জব্দ করেছে প্রশাসন। গতকাল সোমবার ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সদর উপজেলার গৌড় মন্দির রোডের একটি দোকানে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যবসায়ী হলেন-মো. মোতাহার মিয়া ও রহমত আলী। তাদের দোকান থেকে চাল সরানোর সময় আটক দুইজন হলো-উপজেলার বুড়িশ্বর ইউনিয়নের আশুরাইল গ্রামের সারাজ মিয়ার ছেলে শাহা কামাল মিয়া এবং একই গ্রামের লালন মিয়ার ছেলে জুয়েল মিয়া।
জানা গেছে, দরিদ্র ও অসহায় মানুষের জন্য বরাদ্দকৃত এ চাল অবৈধ বিক্রির উদ্দেশ্যে গোপনে মজুত করে রাখা হয়েছিল। খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহীনা নাসরিন এবং উপজেলা খাদ্য গুদামের কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় সরকারি চাল ও চালের সরকারি খালি বস্তাসহ একটি ওজন মাপার মিটার, একটি বস্তা সেলাইয়ের মেশিন উদ্ধার করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার একটি কক্ষে সংরক্ষণ করা হয়।
অভিযান শেষে ইউএনও শাহীনা নাসরিন বলেন, প্রকৃত সুবিধাভোগীদের বঞ্চিত করে সরকারি চাল আত্মসাৎ করা এক ধরনের অপরাধ। সরকারি চাল আত্মসাতের সঙ্গে কেউ জড়িত থাকলে ছাড় দেওয়া হবে না। আমরা ১৬২ বস্তা চাল এবং ১৫০টি খালি বস্তা উদ্ধার করেছি। এই ঘটনায় জড়িত আশুরাইল গ্রামের মো.মোনায়েম মিয়া দোকানের কার্নিস ভেঙ্গে পালিয়ে গেছে, ঘটনাস্থল থেকে আমরা ২ জন শ্রমিককে আটক করেছি। সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই চাল গরীবদের মাঝে বিলিয়ে দেয়ার জন্য তৈরি করা কিন্তু তারা কিভাবে এত চাল সংগ্রহ করেছে, আমরা তা খতিয়ে দেখছি।
অন্যদিকে উপজেলা খাদ্য গুদামের কর্মকর্তা, মো. মনিরুল ইসলাম বলেন নাসিরনগর উপজেলার খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি চালু আছে,এই কর্মসূচির আওতায় গরীব ও দুস্তদের মাঝে চাল বিতরণ করার জন্য ২৬জন ডিলার আছেন,তারা তাদের বরাদ্দকৃত চাল খাদ্য গুদাম থেকে বুঝে নিয়ে যায় এবং এই চাল প্রকৃত উপকারভোগী কার্ডধারীদের যথাযথ নিয়মে বিতরণ করা হয়। আমরা এই অভিযানে চালের মালিককে পাইনি।
এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। ঘটনাস্থলে উপস্থিত আল-আমীন নামে এক ব্যক্তি জানান, অসাধু একটি মহল নিয়মিতভাবে সরকারি চাল ও ত্রাণ আত্মসাৎ করে। এর ফলে প্রকৃত সুবিধাভোগীরা তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তারা প্রশাসনের কাছে অনিয়মকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। অবশ্য প্রশাসনের এ অভিযানে এলাকায় ব্যাপক সাড়া পড়ে যায়। সাধারণ মানুষ স্বস্তি প্রকাশ করে আশা করছেন, নিয়মিত এ ধরনের অভিযান চালানো হলে ভবিষ্যতে কেউ আর সরকারি ত্রাণসামগ্রী আত্মসাতের সাহস দেখাবে না।
মন্তব্য করুন