শনিবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৫

আন্তর্জাতিক মানবপাচার চক্রের মূলহোতাসহ ৫জন গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭:৪৬ পিএম
আপডেট : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭:৪৯ পিএম

হাজারীবাগ থানার মানবপাচার মামলায় আন্তর্জাতিক মানবপাচার চক্রের মূলহোতাসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব-২। জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ওই ৫ জনকে ডিএমপির উত্তরা পশ্চিম থানাধীন ১১ নং সেক্টর থেকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-২।

গ্রেফতারকৃতরা হলো মূলহোতা আমিনুল ইসলাম (৪৬), সহযোগী আব্দুল হাকিম(৫৬), মো. নূর ইসলাম(৩১), আসাদুজ্জামান (৩৫), এবং মো. শাহরিয়ার শেখ মুরাদ(৪২)। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানায় র‌্যাব।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃত আসামি আমিনুল ইসলাম একজন মানবপাচারকারী। মামলার বাদীর ভাই ভিকটিম জাহিদ হোসেন(৪২) কে প্রধান আসামি ইতালি নিয়ে যাওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ২০ লাখ টাকা দাবি করে। ভিকটিম তার কথামত বিভিন্ন সময় টাকা প্রদান করে। পরবর্তীতে ১৩/০৭/২৫ তারিখে প্রধান আসামি আমিনুলের নির্দেশে ভিকটিমকে মদিনা হয়ে মিশরে নিয়ে যায়। তারপর অজ্ঞাত আসামিরা তাকে মিশরে জিম্মি করে মুক্তিপণ দাবি করে। এই ঘটনায় বাদী মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে ডিএমপির হাজারীবাগ থানার মামলা করেন, মামলা নং ৯।

জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) বিষয়টি নজরদারি করে আসছিল এবং মানবপাচার মামলা দায়েরের পর এনএসআই এর দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত ০৭/০৯/২৫ দিবাগত রাতে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)-২ ও হাজারীবাগ থানা পুলিশের যৌথ আভিযানিক দল আমিনুল ও তাদের ৪ সহযোগীসহ মোট ৫ জন কে উত্তরার ১১ নং সেক্টরের প্রধান আসামী আমিনুলের বাসা হতে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকালে তাদের হেফাজত হতে ৯টি পাসপোর্ট, ১০ টি স্মার্ট ফোন, একটি বাটন ফোন ও মানবপাচারের মাধ্যমে অর্জিত নগদ এক কোটি ছাপ্পান্ন লাখ ছাব্বিশ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য যাচাই বাছাই করে তার সহযোগী মানবপাচারকারী চক্রের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানায় র‌্যাব।

র‌্যাব জানায় ভিসা এবং পাসপোর্ট জালিয়াতির মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাঠানোর কথা বলে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সাধারণ মানুষ বিশেষ করে বেকার যুবকদের টার্গেট করে বিগত কয়েক বছরে বিপুল পরিমান অর্থ আত্মসাৎ করে আবদুল্লাহ-আমিনুল এর মানবপাচার চক্রটি। দীর্ঘদিন ধরে তারা তাদের এসকল কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছিলো। ইউরোপে পাঠানোর কথা বলে জন প্রতি ২০/২৫ লাখ টাকা নেয় মানবপাচার চক্রটি। বাংলাদেশ থেকে আমিনুল এবং লিবিয়া থেকে আবদুল্লাহ মানব পাচারের এই কার্যক্রম তত্ত্বাবধান করে থাকে। পাসপোর্ট জালিয়াতির মাধ্যমে প্রথমে ভূয়া ভিসা তৈরী করে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে পাঠায় চক্রটি। ইউরোপে নিয়ে যাওয়ার রুট হিসেবে চক্রটি দীর্ঘদিন প্রথমে মিসর এবং পরবর্তীতে, মিসর হতে লিবিয়া হয়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ঝুঁকিপূর্ণ ও অবৈধ নৌ রুট ব্যবহার করে আসছে।

প্রসঙ্গত ‘বাংলাদেশ আমার অহংকার’ এই শ্লোগান নিয়ে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোরালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র‌্যাবের সৃষ্টিকাল থেকে বিপুল পরিমান অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ উদ্ধার, মাদক, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাস, খুনী, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার করে সাধারণ জনগণের মনে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
গাঁজা বিক্রি করতে নিষেধ করায় খুন হন সাম্য
গাঁজা বিক্রি করতে নিষেধ করায় খুন হন সাম্য
শাড়িকাণ্ডের ঘটনায় তানজিন তিশার নামে মামলা, তদন্তে ডিবি পুলিশ
শাড়িকাণ্ডের ঘটনায় তানজিন তিশার নামে মামলা, তদন্তে ডিবি পুলিশ
মোহাম্মদপুরে যুবককে কুপিয়ে হত্যা, আটক ২
মোহাম্মদপুরে যুবককে কুপিয়ে হত্যা, আটক ২
মোহাম্মদপুরে বাসে তরুণীকে হেনস্তা, কন্ডাক্টর গ্রেপ্তার
মোহাম্মদপুরে বাসে তরুণীকে হেনস্তা, কন্ডাক্টর গ্রেপ্তার